কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় আজ শনিবার রাত ১০টায় কর্ণফুলি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি স্পিলওয়ের গেট খুলে দেওয়া হবে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এক জরুরি বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা আজ বিকেল ৩টায় ১০৭ দশমিক ৬৬ ফুট এমএসএল, যা বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় লেকের উজান ও ভাটি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে আজ রাত ১০টায় স্পিলওয়ের ১৬টি গেট ছয় ইঞ্চি পরিমাণ উঠিয়ে পানি নিষ্কাশন শুরু করা হবে। এতে নয় হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হবে।
এতে জানানো হয়, বর্তমানে লেকের ইনফ্লো ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইনফ্লো বেশি হলে, অর্থাৎ পানির লেভেল অস্বাভাবিক বাড়লে স্পিলওয়ে গেট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে, যার ফলে ৩২ হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা জানান, কাপ্তাই লেকে ১০৮ ফুট এমএসএল পর্যন্ত পানি উঠলে বিপৎসীমার অবস্থা সৃষ্টি হয়। এই পরিমাপে পৌঁছালে ছাড়া হতে পারে কাপ্তাই লেকের পানি।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের দুপুরে জানান, শনিবার ২টা পর্যন্ত কাপ্তাই লেকের পানির পরিমাপ ১০৭ দশমিক ৬৩ ফুট পর্যন্ত উঠেছে। সন্ধ্যা নাগাদ যদি পানি ১০৮ ফুটের কাছাকাছি বা বেড়ে যায় তাহলে কাপ্তাই স্পিল ওয়ের ১৬টি গেটের ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হবে।সবাইকে সাবধানে থাকার অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।
এর আগে, শুক্রবার লেকের পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটির পর্যটনশিল্পের আইকনখ্যাত ঝুলন্ত সেতু। সেতুর পাটাতনের ওপর পানি উঠেছে ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি। পানির চাপে অনেক স্থানে খুলে গেছে পাটাতনের কাঠ। সে কারণে সেতুর ওপর দিয়ে পর্যটক চলাচল নিষিদ্ধ করেছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে লেকে রুলকার্ভ অনুযায়ী প্রয়োজনের চেয়ে পানি বেশি আছে। এ কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যদিওবা পাঁচ ইউনিট থেকে সর্বোচ্চ ২৩০ থেকে ২৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা বা বিপৎসীমার কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি আছে ১০৭.৬৩ এমএসএল (মিন সি লেভেল)। যেখানে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।